অভিনীতের আরম্ভ
()
About this ebook
অভিনীত কোন পারম্পরিক গোয়েন্দা চরিত্র নয়, সে পুলিশও নয়। অন্যান্য গোয়ন্দা চরিত্র তার অনুপ্রেরনা হলেও; সে শান্ত, স্নেহব্যঞ্জক ও ক্ষমাশীল। সে এক সাধারণ ছেলে। জীবনের নিত্য স্রোতে সে ও বয়ে চলেছে, আমাদের সবার মতন। তবে সময় পরিস্থিতি তার সামনে একটি সুযোগ এনে দিলো তার ভালো লাগাকে একবার চেখে দেখার, একবার তার জ্ঞানকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে দেখার। সে সেই সুযোগে কিনে নিল। তারপর কি হলো? কি জানলো? কি শিখলো? সফল হল কিনা? সঙ্গে কে ছিল?
গল্পের প্লট কোলকাতা শহর। শহরের শেষ প্রান্তে এক ধর্মীয় স্থানে দুঃসাহসিক চুরি হয়েছে। চুরি গেছে একটি গুরত্বপূর্ণ জিনিস। সবাই অবাক, কারন এই জিনিসটা গুরত্বপূর্ণ হলেও মুল্যবান কিছু নয়। তাও চুরি হয়েছে। কেন হল? কি কারন? কার অভিসন্ধি?
গল্পের প্রধান চরিত্র অভিনীত দাস ও গল্পকথক অংশুমান সরকারের সঙ্গে নানান কাণ্ড করে অবশেষে সেটা উদ্ধার করতে পারে। কিভাবে কবে ও কে করেছিল, সেটাই এই গল্পের মুল ঘটনা। শেষে আর কোন রহস্য উদ্ঘাটন হয় কিনা এবং শেষে আমাদের সাধারণ অভিদা, অসাধারণ হতে পারলো কি না, সে সব জানার জন্য পড়তে হবে 'অভিনীতের আরম্ভ'।
Sudipto Halder
Starting his journey from writing in Bengali, Sudipto Halder is presently a Masters student. Young writer Sudipto began writing poems as a child. By the time he was in high school he started writing short stories as school curriculum.Literature is like trees the more we nurture the more we receive. Continue nurturing the literature, receive its immense fruits. Connect him on the social media platforms.
Reviews for অভিনীতের আরম্ভ
0 ratings0 reviews
Book preview
অভিনীতের আরম্ভ - Sudipto Halder
S
udipto Halder
Book Title: অভিনীতের আরম্ভ
Author: সুদীপ্ত হালদার
Published by: Sudipto Halder
Kolkata.
Cover Design & Illustration: Author
Edited by: Snigdha Halder
This edition published October 2020
ISBN: 9781005664275
Copyright © Sudipto Halder 2020
The characters and events portrayed in this book are fictitious. Any similarity to real persons, living or dead is coincidental and not intended by the author.
No part of this book may be reproduced, or stored in a retrieval system, or transmitted in any form or by any means, electronic, mechanical, photocopying, recording, or otherwise, without express written permission of the publisher.
উৎসর্গ
সর্বশক্তিমান; যিনি সকল উৎসাহের উৎস.
বাবা ও মা, তাদের সমর্থনের জন্য
১.
বাইরে অঝর ধারায় বৃষ্টি চলছে। সেই কাল সকালে বৃষ্টি শুরু হয়েছে; এখনও থামার বিশেষ কোনো সঙ্কেত নেই। অতএব ঘরে বসে থাকা, আর নিত্য নতুন গল্প বই পড়া ছাড়া আর কিচ্ছু করার নেই। কলেজে আজ স্বঘোষিত ছুটি, কারন কলেজ খোলা থাকলেও, আমি যাইনি; যাওয়ার কোন বিশেষ সুবিধা নেই কারন কোলকাতা আর কোলকাতা নেই; ইতিমধ্যে ভেনিস’এ পরিণত হয়েছে। যে সমস্ত রাস্তা দিয়ে আমাকে কলেজ যেতে হয় তার প্রায় সবকটিই শাখা নদীতে পরিণত হয়েছে। খবরে দেখিয়েছে, সব পুরো পুরো জলে ডুবে গেছে। পৌরসভারও আপাতত কিচ্ছু করার নেই। বৃষ্টি না থামলে কোন কাজই সম্ভব নয়।
বাড়ির ভিতরের খবর জানান দিচ্ছে আজ বাড়ীতে খিচুরি বানানো হচ্ছে। সঙ্গে ডিমভাজা, মাছ ভাজা, বেগুন ভাজা, ইত্যাদি। এই তুমুল বৃষ্টি এই খাবারের প্রধান কারন হলেও খিচুরির পেছনে অন্য কারণও আছে। আমার দাদা বর্ধমান থেকে, কিছু দিন আগে আমাদের বাড়ীতে এসেছে। খুব সম্ভবত এখন থেকে আমাদের এখানেই থাকবে। ও, এসে থেকেই খিচুরির আবদার করছিল। আমার এই দাদার নাকি আমাদের বাড়ির খিচুরি খুবই পছন্দ। ও বলে, ‘এই রকম খিচুরি আর কোথাও খেলাম না’।
আজ খাওয়ার সময়ে একই কথা বলাতে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘পিসিকে বলব?’।
‘বল না!’ দাদা উত্তর দিল, ‘আমার মায়ের ও একই মত। মামির রান্না করা খিচুরি তুখোড়’।
খিচুরি জিনিসটা আমি খুব একটা পছন্দ করি না। কি যেন একটা রুগ্ন রুগ্ন খাবার। চাল ডাল ফুটিয়ে হলদে রঙের অদ্ভুত জিনিস। আমার মা খিচুরি ভালো বানান বটে, কিন্তু জিনিসটা রোজ তৃপ্তি করে খাওয়ার মতন নয়। আমি জানি, আমার দাদারও যে জিনিসটা খুব পছন্দ তা একদমই নয়। কিন্তু যেহেতু আমার পছন্দ নয়, ও এটা ইচ্ছাকরে করে। এটা ওর কাছে একটা মজার ব্যাপার।
আমার দাদার নাম অভিনীত দাস। সম্পর্কে আমার পিসতুতো দাদা। আমি বলি অভিদা। নিজের দাদা নয় তো কি হয়েছে? প্রভেদ করতে পারবেন না। একদম নিজের দাদার মতন। সম্প্রতি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পাশ করে কলকাতায় এসেছে, এবং এবারে পি এইচ ডি ডিগ্রির জন্যে দরখাস্ত করেছে। আমাদের বাড়ীতে আছে, উত্তীর্ণ হলে এখানে থেকেই পড়াশোনা করবে। সেই উপলক্ষে বাড়ি থেকে মাসিক খরচও পাঠানো হয়। দাদার বাড়ির লোকেরা খাওয়ার খরচও পাঠাতে চেয়েছিল, কিন্তু আমার বাবার এক ধমকে তাদের এখনকার মতন নিরস্ত্র করা গেছে। তবে টেলিফোনে সেই টাকা নেওয়ার নিত্য অনুরোধ, মিনতি এখনও চলে।
আমার এই দাদার ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হয় ওর বুদ্ধির ও জ্ঞানের কথা। নিজের পাঠ্য বইয়ের বাইরেও জ্ঞান প্রচুর। ছোট ছোট নিউজ আর্টিকেল ওর ভীষণ মনে থাকে। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স’এও বিশেষ পান্ডিত্য। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; গোয়েন্দা সাহিত্যে ওর জ্ঞান অগাধ। বয়স ২৭। ইদানিং দাড়ি রেখেছে তাই একবার দেখে বয়স বলে দেওয়া একটু শক্ত।
আমি অংশুমান সরকার। আমাকে সবাই আশু বলেই ডাকে। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। গোয়েন্দা গল্প পড়েছি, পড়তে ভালও লাগে, তবে দাদার মতন পান্ডিত্য নেই। আর পান্ডিত্য নেই বলেই দাদার নানান ধাঁধা বুঝতে পারি না। যেমন, তিন অক্ষর নাম তার চকচক করে, মাঝের অক্ষর বাদ দিলে অসুখ ত্বরা সাড়ে
। আর একটা হল, মৌমাছি নয়, বোলতা নয়, নয়কো ভীমরুল। আর কে আছে, বলে ফেলো, যে ফোটায় হুল
। দুটোই প্রথমে আমার কাছে ভীষণ কঠিন মনে হয়েছিল, কিন্তু উত্তর শোনার পর তেমনি অবাক লেগেছিল। আমি মন থেকে চাই এমন একটা ঘটনা ঘটুক যেখানে ও ওর পান্ডিত্য ব্যাবহার করতে পারবে। ওর জ্ঞানের একটা পরিক্ষাও হয়ে যাবে। কিন্তু সে যাই হোক, আমি আমার দাদাকে একদম নিজের দাদা মতন দেখি, সন্মান করি, ভালোও বাসি। আর আমি জানি সেও আমাকে ততটাই ভালোবাসে।
কিছুক্ষন আগে ঘড়ি অনুযায়ী বিকেল হয়েছে। ঘড়ি ছাড়া সেটা জানাই যেত না, কারন আকাশের যা অবস্থা সারাদিনই বিকেল মনে হয়। বৃষ্টিটা এখন